মার্কিন শঙ্কা রহস্যজনক রুশ স্যাটেলাইটে
ডিটেকটিভ প্রযুক্তি ডেস্ক
“খুবই অস্বাভাবক আচরণ” করছে রহস্যজনক এক রুশ স্যাটেলাইট, আর এতে সতর্ক যুক্তরাষ্ট্র- না কোনো সিনেমার কাহিনি নয় বরং খোদ মার্কিন কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
১৪ অগাস্ট সুইজারল্যান্ডে এক সম্মেলনে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ইলেম পোবলেটে বলেন, “এখন আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না এটি কী আর এটি যাচাই করারও কোনো উপায় নেই।” এটি কোনো অস্ত্র কিনা তা এখনও বলা সম্ভব নয় জানিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, এই মন্তব্যকে “ভিত্তিহীন, সন্দেহের উপর করা মিথ্যা অভিযোগ” হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া।
২০১৭ সালে এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসি;র প্রতিবেদনে।
সুইজারল্যান্ডে নিরস্ত্রীকরণবিষয়ক ওই সম্মেলনে পোবলেটে বলেন, রুশ পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইটের কার্যক্রমসহ কক্ষপথে করা আগের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে এই স্যাটেলাইটটির কক্ষপথের আচরণ অসঙ্গতিপূর্ণ। তিনি বলেন, “সম্মানের সঙ্গে বলছি এই স্যাটেলাইট নিয়ে রাশিয়ার উদ্দেশ্য অস্পষ্ট আর যথেষ্ট সমস্যা তৈরি করছে।” রাশিয়ার স্পেস ফোর্সেস-এর কমান্ডারের সাম্প্রতিক মন্তব্যও উদ্ধৃত করেন পোবলেটে। রুশ কমান্ডার “নতুন অস্ত্রের প্রোটোটাইপ” বানানো তার বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন।
রাশিয়া স্যাটেলাইটবিরোধী অস্ত্র বানাচ্ছে এমন শঙ্কা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের “জোর উদ্বেগ” রয়েছে বলেও জানান পোবলেটে।
আলেকজান্ডার ডেয়নেকো নামের এক জ্যেষ্ঠ রুশ কূটনীতিক রয়টার্স-কে বলেন, এই মন্তব্যগুলো “সন্দেহের উপর ভিত্তি করে করা মিথ্যা অভিযোগ, ভিত্তিহীন বা কল্পনাপ্রসূত।” মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা ঠেকাতে একটি রুশ-চীনা চুক্তিতে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানান তিনি।
বন্দুকের মতো প্রচলিত অস্ত্রগুলোর তুলনায় মহাকাশ অস্ত্রগুলো আরও সূক্ষ উপায়ে ক্ষতিসাধন করার সক্ষমতা দিয়ে বানানো হতে পারে, যা কক্ষপথে প্রচুর ধ্বংসস্তূপ জমা করতে পার- এমনটাই মত রয়াল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট-এর গবেষণা বিশ্লেষক আলেকজান্ডার স্টিকিংস-এর। তিনি বলেন, “এসব অস্ত্রে লেজার বা মাইক্রোওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি থাকতে পারে যা একটি স্যাটেলাইটকে একটি সময়ের জন্য থামিয়ে দিতে পারে, অথবা একে ধ্বংস না করে বা জ্যামিংয়ের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে থামিয়ে দিতে পারে।” কিন্তু মহাকাশভিত্তিক সক্ষমতা নিয়ে অনেক তথ্য গোপন হওয়ার কারণে কী প্রযুক্তি রয়েছে তা জানা কঠিন বলে মত তার।
মহাকাশে হস্তক্ষেপ করছে এমন যে কোনো ঘটনা কোনো রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা শত্রুভাবাপন্ন পদক্ষেপ কিনা তা প্রমাণ করাও খুব কঠিন হবে বলে জানান এই বিশ্লেষক।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘স্পেস ফোর্স’ নামে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি ষষ্ঠ শাখা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেদিক থেকে পোবলেটে’র করা মন্তব্য বিশেষভাবে ভাবায়, বলেন স্টিকিংস। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আসা কথাগুলো হচ্ছে ‘মহাকাশ সত্যিই শান্তিপূর্ণ, এখন দেখুন রাশিয়া আর চীন কী করছে’- কিন্তু এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র নিজেরাই যে সক্ষমতা বাড়াচ্ছে তা এড়িয়ে যাচ্ছে।”
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, তিনি রুশ স্যাটেলাইট শনাক্ত নিয়ে কিছু নিশ্চিত করতে বা অস্বীকার করতে পারবেন না।